বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
পটুয়াখালী বাউফলে কৃষক দলের নেতার উপর হামলা বিচারের দাবিতে প্রতিবাদে নিন্দা ভিক্ষব মিছিল দেশের সংকটময় মুহূর্তে দলমত নির্বিশেষে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো নৈতিক দায়িত্ব….এবিএম মোশাররফ হোসেন বেগম জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়ার আয়োজন বরিশালে বাংলা বিভাগ আন্তঃবর্ষ শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ ও পুরস্কার বিতরণ বাউফলে নবনির্মিত পাবলিক লাইব্রেরীর শুভ উদ্বোধন বরিশালে অসহায় ব্যবসায়ী আইউব ফরাজীর পাশে আবু নাসের রহমতুল্লাহ পটুয়াখালীর ইটবাড়িয়া সাবেক ইউপি সদস্য সরোয়ার হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন বরিশালে মরহুম অধ্যক্ষ ইউনুস খানের ৩১ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে স্বরণসভা ও দোয়া মাহফিল বরিশালে রক্তদানের অপেক্ষায় বরিশাল সংগঠনের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কলাপাড়ায় নদীর বুকে রঙিন নৌবহর প্রদর্শনী ও সচেতনতামূলক প্রতিবাদ বস্তা খুলতেই ৫০ কেজি ওজনের বিরল প্রজাতির একটি কচ্ছপ’ বরিশালে ছাত্রদলের মিষ্টি বিতরণ, আনন্দ র‌্যালি শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডে খুশি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত তিন পরিবার কলাপাড়ায় গৃহবধুকে জ/বাই করে হ/ত্যা বরিশালে সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে “নো প্রমোশন, নো ওয়ার্ক” কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষকরা
পটুয়াখালীতে একই পরিবারে ৫৭ জন পবিত্র আল-কোরআন শরীফের হাফেজ!

পটুয়াখালীতে একই পরিবারে ৫৭ জন পবিত্র আল-কোরআন শরীফের হাফেজ!

Sharing is caring!

হেলাল আহম্মেদ(রিপন) পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলায় একই পরিবারে ৫৭ জন পবিত্র আল-কোরআন শরিফের হাফেজ হয়েছেন। এই বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ইতিমধ্যে জেলায় সুনাম কুড়িয়েছেন৷ খোঁজ নিয়ে জানাযায়,তিনি সদর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মো,নূর মোহাম্মদ এর পুএ একাত্তরোর্ধ্ব শাহজাহান হাওলাদার।

তিনি ইসলামকে প্রধান্য দিয়ে নিজ পরিবারের  ৫৭ জনকে পবিত্র আল-কোরআন শরিফের হাফেজ বানিয়েছেন। এরা হলেন হাফেজ মাওলানা মজিবুর রহমান, হাফেজ মাওলানা নূর হোসেন, হাফেজ মাওলানা আবু বকর, হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ হাসান, হাফেজ মাওলানা মো. সোলাইমান, হাফেজ মাওলানা এমদাদুল্লাহ্, হাফেজ মাওলানা তালহা, হাফেজ ইব্রাহীম, হাফেজ মো. জোবায়ের, হাফেজ মাওলানা সালাহ্ উদ্দিন, হাফেজ মাওলানা সালমান, হাফেজ মাওলানা জোনায়েদ, হাফেজ মাওলানা সফিক, হাফেজ মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, হাফেজ মাওলানা সাইফুল্লাহ্, হাফেজ মাওলানা আবদুল্লাহ্, হাফেজ মাওলানা লোকমান, হাফেজ মাওলানা রাইহান, হাফেজ মাওলানা ইমরান, হাফেজ মোহাম্মদ, হাফেজ মাওলানা ইলিয়াস, হাফেজ আহমদ, হাফেজ মাওলানা নোমান, হাফেজ মাওলানা রেদওয়ান, হাফেজ মাওলানা রোহান, হাফেজ মাওলানা সানাউল্লাহ্, হাফেজ মাওলানা সাকাওয়াতুল্লাহ্, হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ্, হাফেজ আবদুল আলীম, হাফেজ মাওলানা জোবায়ের, হাফেজ মাওলানা আবদুল্লাহ্,হাফেজা মাওলানা মানসুরা, হাফেজা মাওলানা ফারহা, হাফেজা মাওলানা মারওয়া, হাফেজা মাওলানা ফাতেমা, হাফেজা মাওলানা রাহিমা, হাফেজা বুশরা, হাফেজা ইসরা, হাফেজা মোসা. খাদিজা, হাফেজা মোহাইমিনা, হাফেজা মুসফিকা, হাফেজা মোবাশ্বেরা, হাফেজা সামসুন্নাহার, হাফেজা নাসিমা, হাফেজা সুমাইয়া, হাফেজা মারজান, হাফেজা আফনান, হাফেজা রাউয়ান, হাফেজা খানসা, হাফেজা মনিরা, হাফেজা উম্মেহানী, হাফেজা নাসরিন, হাফেজা নাদিফা, হাফেজা আম্মারা, হাফেজা আয়শা, হাফেজা সামাইয়া মনি, হাফেজা আবু হোরায়রা, হাফেজ হুজাইফা।

সরেজমিন ঘুড়ে দেখাযায়, জামিয়া ইসলামীয়া আমেনা খাতুন মহিলা মাদ্রাসায় শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে হাফেজ জোবায়ের শিক্ষার্থীদের কোরআন পড়াচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা সুমধুর কণ্ঠে কোরআন তিলাওয়াত করছে।

জানাগেছে, বাউফল সদর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রাম এলাকার বাসিন্দা হাজি আকরাম আলী হাওলাদার পেশায় একজন পণ্ডিত ছিলেন। হাজি আকরাম আলী হাওলাদারের ছেলে নুর মোহাম্মদ হাওলাদার, তিনিও পেশায় পণ্ডিত ছিলেন। নুর মোহাম্মদ হাওলাদারের ছেলে হাজি শাহজাহান হাওলাদার। বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের বোলতলী গ্রাম এলাকার বাসিন্দা কাঞ্চন মুন্সি সিকদারের মেয়ে মাঞ্জুরা বেগমের সঙ্গে পরিবারিকভাবে শাহ্জাহান হাওলাদারের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ  হয়। শাহ্জাহান ও মাঞ্জুরা দম্পতির ঘর আলোয় আলোকিত করে একে একে ছয় ছেলে ও চার মেয়ে জন্ম নেন।

শাহজাহান হাওলাদার বাউফল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। অথচ তিনি নিজ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিক শিক্ষাঙ্গন প্রতিষ্ঠান করেছেন হাফেজিয়া মাদ্রাসা। পবিত্র কোরআনের হাফেজ বানিয়েছেন নিজের ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের অন্যদেরও। তাদের বিয়েও দিয়েছেন হাফেজদের সঙ্গে। সব মিলিয়ে পরিবারের এখন ৫৭ জন কোরআন শরিফের হাফেজ। বাড়ির ছোটরাও হাটছেন ঐ একই পথে।

একান্ত সাক্ষাৎকালে মো,শাহজাহান হাওলাদার দৈনিক বাংলাদেশ কন্ঠের প্রতিনিধিকে জানান, তার বাবা (নুর মোহাম্মদ) ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। তিনি হজ্ব পালন করতে সৌদি আরবে যান। সেখানে হজ্ব পালনরত অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন। তার বাবা হাফেজদের ছোট বেলা পছন্দ ও খুব ভালোবাসতেন। এ কারণেই লক্ষ্য স্থির করেছেন, পরিবারের সবাইকে তিনি হাফেজি পড়াবেন।

সেই লক্ষমাত্রাকে বুকে লালন করে ও সূত্র ধরে আত্মীয়তাও করেছেন হাফেজ পরিবারের  সঙ্গে। পরে ছেলে-মেয়েদের বিয়েও দিয়েছেন হাফেজদের সঙ্গে। এরপর তার ইচ্ছা অনুযায়ী, তার ছেলে-মেয়েরাও তাদের সন্তানদের হাফেজি পড়িয়েছেন ও বর্তমানে পড়াচ্ছেন।

এসময় তিনি আরো বলেন, ৪৫ বছর আগে স্ত্রীর ১৩ ভরী স্বর্ণ ও ১৩ কেজি রুপা মাদ্রাসায় দান করা হয়। তা দিয়েই আমাদের বাড়ির সামনে প্রথম মাদ্রাসা স্থাপন করা হয়। এখনো নিজের খরচে মাদ্রাসা পরিচালনা করছি। সরকারি কোনো সহায়তাও পাইনি। তিনি জানান, ছেলেদের মাদ্রাসা পরিচালনা করেন তার ছেলেরা এবং মেয়েদের মাদ্রাসা পরিচালনা করেন তার মেয়ে ও ছেলের বউয়েরা। আমার যা ছিল, তার সবকিছু মাদ্রাসা স্থাপন ও পরিচালনায় খরচ করি। তারপরও মাদ্রাসার সব খরচ পোষাতে পারি না। এ জন্য সরকার যদি এতিম ছেলে-মেয়েদের জন্য সহায়তা করত, তাহলে ভালো হতো, বলেন তিনি।

শাহজাহানের পঞ্চম ছেলে হাফেজ জোবায়ের বলেন, আমিসহ আমার বাবার ছয় ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে ও তার আট ছেলে-মেয়ে এবং এক মেয়ে জামাতা সৌদি আরব থাকেন। বাকি সবাই ব্যবসার পাশাপাশি হাফেজি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা ও মসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করছি। ঢাকা, বরিশাল, বাউফলসহ ২৫টি মাদ্রাসা স্থাপন করেছি। আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করে অনেকে ৮০টি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে জানান তিনি।

স্থানীয় মেহেন্দী প্লাস আশরাফুল কওমি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ মাওলানা মাইনুল ইসলাম জানায়, সমাজে একই পরিবারের ৫৭ জন কোরআন শরিফের হাফেজ হওয়ায় শাহজাহান হাওলাদার জেলায় সুনাম কুড়িয়েছেন। এটা বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পটুয়াখালী জেলার বাউফলে।

শাহজাহান হাওলাদারের চাচাতো ভাই ফয়েজ আহম্মেদ বলেন, চাচাতো ভাইয়ের পরিবারের সব সদস্য আল্লাহর দিনের কাজ শিক্ষা গ্রহণ করেছে, এটা আমাদের জন্য নয় সকল মুসলমান জাতির জন্য গৌরবময় ইতিহাস হয়ে থাকবে আজীবন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD